কলকাতা প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সংবাদ কেন্দ্র উদ্বোধন 

 

নিজস্ব প্রতিবেদন 

বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে মৌলবাদী অপশক্তি নির্মূলে সংকল্পবদ্ধ। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জন্মলগ্ন থেকেই অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। দলটির লক্ষ্য বাংলাদেশে মৌলবাদীদের মূলোৎপাটন।” বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতা প্রেসক্লাবে “বঙ্গবন্ধু সংবাদ কেন্দ্র” উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়, আমরা এমন চিন্তা-ধারায়ও বিশ্বাসী নই, আমরা সবাই বাঙালি এবং বাংলাদেশী, আমাদের স্বার্থ অভিন্ন।” এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, মৌলবাদী অপশক্তি যে কোন দেশের জন্যই ক্ষতিকর।

কলকাতা প্রেসক্লাব আয়োজিত এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর। বিশেষ অথিতি ছিলেন কলকাতাস্থ উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান ও বাংলাদেশের কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। এ ছাড়াও দিল্লি প্রেসক্বাবের সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ি,  বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেসমিনিস্টার শাবান মাহমুদ, উপ-দূতাবাসের প্রথম সচিব (প্রেস) রঞ্জন সেন, কাউন্সিলার(কনসল) মো: বশিরউদ্দিন, প্রেসক্লাবের সহ-সাধারণ সম্পাদক নিতাই মালাকারসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন। সভাপতির ভাষণে কলকাতা প্রেসক্লাব প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস সুর বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এ সংবাদ কেন্দ্র স্থাপন আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন ও সংগ্রাম করায় ভারতে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গেও অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। এ সংবাদ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার অর্থ বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে প্রকৃত ইতিহাস জানতে নতুন প্রজন্মের জন্য এই কেন্দ্র উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।’

উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কলকাতা প্রেসক্লাব এবং কলকাতার সাংবাদিকদের উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বিকৃতিতে বাংলাদেশের স্বাধিনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতা প্রেসক্লাবে ‘বঙ্গবন্ধু সংবাদ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়’। তৌফিক হাসান বলেন, কলকাতা প্রেসক্লাব ও বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন-র যৌথ সহায়তায় স্থাপিত এই সংবাদ কেন্দ্রে কম্পিউটার, প্রদর্শনী হল, লাইব্রেরি এবং প্রজেক্টরসহ আধুনিক ডিজিটাল সুবিধাদি-র ব্যাবস্থা থাকবে। এই সংবাদ কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থা, টেলিভিশনে কর্মরত সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ, সংবাদ লেখা, সম্পাদনা ও পরিবেশনা করতে পারবেন।

উদ্বোধনী বক্তব্য শেষে মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ঐতিহ্যবাহী প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে প্রতিষ্ঠিত এই সংবাদ কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি কলকাতা প্রেসক্লাবে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিরও উন্মোচন করেন। ড. হাছান এসময় বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণ ও সরকারের অকুণ্ঠ সহায়তা এবং হাজার হাজার ভারতীয় সেনাসদস্যের প্রাণদানের কথা উল্লেখ করেন। সেই সাথে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের খবর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে কলকাতা প্রেসক্লাব যে বিশাল ভূমিকা রেখেছে, বাঙালির তা কখনও ভুলবেনা

অনুষ্ঠানে কলকাতার সাংবাদিকরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রনাঙ্গণ থেকে অত্যান্ত ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ এবং পরিবেশন করতেন। তাদের এই উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বিকৃতিতে কলকাতার পাঁচজন বিশিষ্ট বষীর্য়ান সাংবাদিককে কলকাতা প্রেসক্লাব-র পক্ষ থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধ সুবর্ণ জয়ন্তী কলম সেনা’ সন্মামনা প্রদান করা হয়। এরা হলেন স্টেটসম্যান পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক মানস ঘোষ, যুগান্তর পত্রিকার দিলীপ চক্রবর্তী, আনন্দবাজার পত্রিকার সুখরঞ্জন দশগুপ্ত, টেলিগ্রাফ পত্রিকার তরুণ গাঙ্গুলী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায় l বর্ষীয়ান এই পাঁচ সাংবাদিকদের সন্মনাপত্র তুলে দেন প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী ড۔ হাছান মাহমুদl ও প্রেসক্বাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর।