ভিওসি রিপোর্ট,
একটানা ৫৬ দিনের জেল হেফাজত শেষে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) ফের কলকাতার নগর দায়রা আদালতে তোলা হল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলার পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার)- সহ মোট ছয় অভিযুক্তকে।
এদিন স্থানীয় সময় সাড়ে ১১ টা নাগাদ তাদের বিদ্যুৎ কুমার রায়’এর এজলাসে তোলা হয়। উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে বিচারক আগামী ৮ ডিসেম্বর অভিযুক্তদের ফের আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
১৪ মে পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ইডি’র হাতে গ্রেফতার হন পিকে হালদার, তার ভাই ও অন্য সহযোগীরা।
এদিন আদালতে এই মামলার মূল অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদারের আইনজীবী বিশ্বজিৎ মান্না আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, তার মক্কেল স্নায়ু রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত এবং প্রকৃত চিকিৎসার দরকার। তাই তিনি তাকে কলকাতার যে কোন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল বা এসএসকেএম-এর মতো সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করার জন্য আদালতে আর্জি জানায়। আদালতও সে ব্যাপারে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কারাগার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে।
এদিন অভিযুক্তদের আইনজীবী আরও জানান, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ইডি-র তরফে আদালতে সাড়ে ৪ হাজার পাতার যে Relied Upon Documents (RUD)-এর কপি জমা দেওয়া হয়েছিল, তার বেশ কিছু অংশ অস্পষ্ট। সেই কপিগুলিও পুনরায় জমা দেওয়ার জন্যও আদালত স্পষ্ট নির্দেশ দেন।
পরবর্তী হাজিরা দিন পর্যন্ত অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই কারাগারে থাকবেন। তবে এই সময়কালে প্রয়োজনে কারাগারে গিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন বলেও এদিন আদালত জানায়।
ইডি’র আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী সংবাদ-কে বলেন, , অভিযুক্ত প্রত্যেককেই আগামী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কারাগারে থাকাকালীন অবস্থায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি বা নতুন কোন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়নি বলেও এদিন জানান ইডির আইনজীবী।
এর আগে কয়েক দফায় দীর্ঘমেয়াদে জেল হেফাজতে নির্দেশ দিলেও বৃহস্পতিবার জেল নির্দেশ স্বল্প মেয়াদে তা দেওয়া হয়। স্বভাবতই এই মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পিকে হালদারের আইনজীবী অভিজিৎ মান্না বলেন, এর কারন মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শিগ্গিরই শুরু হবে। আর সেই কারণেই জেল হেফাজতের মেয়াদ কমিয়ে আনা হচ্ছে।
গত ১১ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। ‘অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২’ (PMLA) এবং দুর্নীতি দমন আইন-১৯৮৮ মামলায় ওই ছয় অভিযুক্তের নামে চার্জসীট জমা দেয়া হয়। বর্তমানে অভিযুক্ত পিকে হালদারসহ ৫ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছে প্রেসিডেন্সি কারাগারে, অন্যদিকে একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।
উল্লেখ্য, অশোকনগরসহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে গত ১৪ মে পি.কে হালদার- এর সাথেই গ্রেফতার করা হয় তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারকে।