প্রণব ভট্রাচার্য্য

শারদপার্বণ সূচনা লগ্নে উৎসবে মাতল কলকাতায় অবস্থিত ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাব। ‘বাংলার মিষ্টি আর বাংলাদেশের ইলিশ’ শিরোনামে সদস্যদের নিয়ে শনিবার(১৭ সেপ্টম্বর) ঘরোয়া একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল প্রেসক্লাব। সেখানে প্রত্যেক সদস্যর হাতে তুলে দেওয়া হয় জগৎখ্যাত সুস্বাদু বাংলাদেশের ইলিশ এবং কলকাতার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি, রসগোল্লা। শারদীয়ার আগে এরকম একটি অনুষ্ঠান হওয়ায় আনন্দিত বাংলাদেশ গণমাধ্যমের ভারতীয় প্রতিনিধিরা।‘ইন্দো বাংলা প্রেসক্লাব’ এর মুখপাত্র দীপক দেবনাথ বলেন, একে অপরের পাশে থাকাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আর কিছুদিন বাদেই কলকাতাবাসী দুর্গোৎসবে মাতবে। আমরা চাই এই উৎসবের দিনগুলি সকলের কাছে আনন্দময় এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠুক। আর সেই লক্ষ্যেই আমাদের এই ছোট প্রয়াস।অনুষ্ঠানে প্রত্যেক সদস্য নিজেদের মতো করে তাদের মতবিনিয় করেন। সেখানে উঠে আসে নানান প্রসঙ্গ। কিভাবে বাংলাদেশ- ভারত, বিশেষ করে দুই বাংলার সুসম্পর্ক বজায় থাকে, এবং বাংলাদেশী সাংবাদিকরা যদি কলকাতায় সমস্যায় পড়ে তাহলে ইন্দো বাংলা প্রেসক্লাব কিভাবে তাদের পাশে থাকবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ গণমাধ্যমের কলকাতা প্রতিনিধি হিসাবে কর্মরত কয়েকজন প্রতিনিধি যারা আজ আমাদের মধ্যে নেই- তাদের পরিবারের পাশে কিভাবে প্রেসক্লাব থাকবে, এরসাথে বর্তমান সদস্যদের কি কি ভাবে সহযোগিতা করা হবে- এরকম নানা প্রসঙ্গ নিয়ে মত বিনিময় হয়।   মতবিনিময় অনুষ্ঠানে শারদীয়ার উপহার হিসেবে পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো ইলিশের বিষয়টিও উঠে আসে। সকলেরই একমত বাংলাদেশের ইলিশের স্বাদই আলাদা। কিন্তু ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইলিশ রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার ফলে কলকাতার বাজারে ইলিশ আমদানি কার্যত বন্ধ ছিল। ফলে পদ্মার ইলিশের সাধ থেকে বঞ্চিত ছিল ভোজনরসিক বাঙালি। কিন্তু গত চার বছর শারদীয়ার উপহার হিসেবে সীমান্ত পেরিয়ে এবার  ইলিশ ঢুকছে ভারতে । সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগকে স্বাগত জানান প্রেস ক্লাবের সদস্যরা।

গত ১৪ মার্চ কলকাতার মাটিতে আত্মপ্রকাশ ঘটে  ‘ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাব’ এর। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে পথচলা শুরু করে ২৪ আগস্ট। সেইদিনই বাংলাদেশ গণমাধ্যমের প্রত্যেক কলকাতা প্রতিনিধিরা সদস্য পদ নেয়ইতিমধ্যেই এই প্রেস ক্লাবের সদস্য হতে উৎসাহের বার্তা এসেছে আসাম, ত্রিপুরা এবং দিল্লি থেকেও। পাশাপাশি সদস্য হতে উৎসাহ দেখাচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। প্রেসক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও বিদেশী গণমাধ্যমে কর্মরত ভারতীয় প্রতিনিধি (নাগরিক) তারা পাবেন সাধারণ সদস্য পদ এবং যারা বাংলাদেশি এবং বিদেশি নাগরিক- সেসব সাংবাদিকদের দেওয়া হবে সাম্মানিক সদস্যপদ। তবে অবশ্যই সংলিষ্ট গনমাধ্যমের সাথে ন্যূনতম তিন বছর তাদের যুক্ত থাকতে হবে।

প্রেসক্লাবের মুখপাত্র দীপক জানান, আমাদের ক্লাবে সদস্য হওয়ার জন্য অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাতে আমারাও উৎসাহ বোধ করছি। ভারত এবং বাংলাদেশের সাংবাদিকদের মধ্যে সমন্বয় রেখে খুব শীঘ্রই ওয়েবসাইট চালু করা হচ্ছে। যেখানে ক্লাবের কার্যকলাপ, তথ্য এবং কিভাবে সদস্যপদ সংগ্রহ করা যাবে, সে বিষয়ে বাংলা এবং ইংরেজী দুই ভাষাতেই সমস্ত বিবরণ দেওয়া থাকবে।

অনুষ্ঠান শেষে একে অপরকে মিষ্টি মুখ করিয়ে আগামীর শুভকামনা করেন ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাবের সদস্যরা।